৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, দুপুর ২:৫৫

চুনকা আমাদের নেতা ছিলেন : খোকন সাহা

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

প্রাইম নারায়ণগঞ্জ:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেছেন, আমি কিন্তু হিন্দু হিসাবে বক্তব্য দিতে আসি নাই এবং আমি কিন্তু অনশন করি নাই। অনশন করছে নেতৃবৃন্দ, আমি শুধু সংহতি প্রকাশ করার জন্য আসছি। তিনি বলেন, আলী আহাম্মদ চুনকা কে ছিলেন, আমাদের নেতা ছিলেন। উনাকে কারা ফেল করাইছে, কারা ডুবাইছে? সেই রফিউর রাব্বী, আব্দুর রহমান এই তথাকথিত নাগরিক কমিটিই কিন্তু ঐ লিফলেটগুলো করেছিলো, যেখানে লেখা ছিলো “যে বা করেছে দেবতার অন্যগ্রাস, বিন্দাবন জ্ঞানে কয় তার হবে সর্বনাশ।” এ কথাটি চন্দন স্মরণ করিয়ে দিলো।

নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও তার পরিবার কর্তৃক হিন্দু দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা ও হুমকি প্রদানের প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচীতে তিনি এসব কথা বলেন।

বুধবার (০২ ডিসেম্বর) বিকেলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ প্রতীকী অনশন পালিত হয়।

এসময় খোকন সাহা বলেন, আমি এখানে আসার পরে দেখলাম নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মতি, আলা, খোকন, হাসান, দুলাল, সজল, রুহুল সহ প্রায় ২৪/২৫জন কাউন্সিলর সংহতি প্রকাশ করার জন্য আসছে। ভালোই লাগলো, ভালো লাগলো। ইস্যুটা ধর্মীয় সম্পত্তি দখল, কে করেছেন মেয়রের পরিবার। আর মেয়রের পরিষদের ২৪-২৫ জন কাউন্সিলর উপস্থিত হয়েছেন সংহতি জানানোর জন্য।

আজকে এই দেবোত্তর সম্পত্তি সম্পর্কে যে মামলা তা আমাকে এড. মোহসীন দেখাইছে। এই সম্পত্তি কারা দখল করছে, আইভীর মামা, খালা, মা, ভাইয়েরা দখল করে আছেন। জাল দলিল সৃজন করেছেন। শত শত বছরের পুরোনো মন্দির, মন্দিরের জায়গা দখল করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত। রায় হয়েছে, রায় মানেন না। ১৪ নম্বরী দলিল করেছেন।

মেয়রের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি মেয়র মহোদয়কে কিছু বলতে চাই, আপনার বাবাকে কিন্তু তার আশেপাশের লোকেরাই ডুবাইছিলো। দেবোত্তর সম্পত্তি ফিরিয়ে দিন। যে কটা দিন আছেন নারায়ণগঞ্জের মানুষের সেবা করুন। মেয়র আইভীকে বলতে চাই, সৃষ্টিকর্তা আপনাকে অনেক দিয়েছে। সরে যান, দেন না সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পদ তাদের ফিরিয়ে। যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখল করতে চায়, আত্মসাত করতে চায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তথা আমার নেত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে আগামীতে মনোনয়ন দিবেন না। এটা আমি বিশ্বাস করি। কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রক্ষাকবজ।

মেয়রের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে শ্মশানের জায়গা বেদখল হয়ে গেলো। শ্মশান কমিটির পক্ষ থেকে ৬০ শতাংশ জায়গার দাবীতে মামলা করলেন, সিটি কর্পোরেশনের কাছে দলিল চাইলে কর্তৃপক্ষ বলে দলিল তো নাই। এটা কোনো কথা। যারা দান করলেন সেই হরকান্ত ব্যানার্জির দলিল নাকি নাসিকের কাছে নাই। কই গেছে, পোকায় খাইয়া ফেলাইছে নাকি নষ্ট হইয়া গেছে। চেয়ারে বসে যদি সম্পত্তি রক্ষা করতে না পারেন তাহলে ছেড়ে দেন না, ছেড়ে দেন, কোনো প্রয়োজন নাই।

মহানগরের এ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের দায়ভার আওয়ামীলীগ নিবে না। আমি ২৫ বছর ধরে শহর-নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছি। এর দায়ভার আওয়ামীলীগ বহন করবে না, বহন করতে পারে না। সিদুর পরবেন, কর্মী সাজবেন, ঠাকুররে প্রণাম করবেন আর ঠাকুরের সম্পত্তি খাইবেন এ ভন্ডামিটা কিন্তু ছাড়তে হবে। আমাকে কিন্তু নারায়ণগঞ্জের হিন্দুরা সেক্রেটারী বানায় নাই। নগরে কয়জন আছে হিন্দু সভাপতি-সম্পাদক, হাতে গোনা দু/একজন। আমাকে মুসলিম সম্প্রদায় সেক্রেটারী বানিয়েছে ২৫ বছর যাবৎ।

তিনি আরও বলেন, আমি শুধু মন্দির নিয়ে কথা বলতে চাই না, যে কোনো ধর্মের ধর্মীয় সম্পত্তি দখল করলেই আমি কথা বলবো। আজকে যদি কেউ কোনো হিন্দু সম্পদ দখল করে রাখেন তাদের আজকের এ সমাবেশ থেকে সময় দিলাম মাত্র ২ ঘন্টা। আর যদি মুসলিমদের সম্পদ দখল করে রাখেন তাহলে তাকে সময় দিলাম ২৪ ঘন্টা।

আজকে সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গতে চায়, আমরা পরিস্কার ভাবে বলতে চাই, নারায়ণগঞ্জে অপকর্ম করার চেষ্টা করবেন না। হ্যা, এ ভাস্কর্য ভাঙ্গার সাহস তখনই পায় যখন প্রগতিশীল দলের মধ্যে জামাত-শিবিরের এজেন্ট ঢুকে যায়। যারা জামাতে ইসলামীর মতো চিন্তা করেন, জামাতে ইসলামীকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন, তারা যদি আওয়ামীলীগের নেতাও হন এবং আপনাদের সাথে জামাত-ইসলামের সাথে সম্পর্কের কারণে তারা এ ভাস্কর্য ভাঙ্গার সাহস পায়।

জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ প্রতীকী অনশনে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, যুবলীগ নেতা এহসানুল হক নিপু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, বর্তমান সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রাফায়েল প্রধান, মহানগরের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসান, ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতি, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন আলা, ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখারুল আলম খোকন, ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধান।

প্রতীকী অনশনে আরও উপস্থিত ছিলেন লক্ষী নারায়ণ আখড়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, মহানগরের সভাপতি লিটন পাল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান প্রমুখ।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.